ভারতে অস্তিত্বহীন দেশের নামে দূতাবাস, গ্রেপ্তার স্বঘোষিত রাষ্ট্রদূত

ভারতে অস্তিত্বহীন দেশের নামে দূতাবাস, গ্রেপ্তার স্বঘোষিত রাষ্ট্রদূত

উত্তর প্রদেশ পুলিশ

‘দেশের’ নাম ওয়েস্ট আর্কটিকা। সেই দেশটির ভারতীয় দূতাবাস রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি ভাড়া বাসায়। আর সেই ‘দেশের ভারতীয় রাষ্ট্রদূতের’ নাম হর্ষবর্ধন জৈন (৪৭)।

সম্প্রতি এই ‘রাষ্ট্রদূত’ গ্রেপ্তার হয়েছেন। কারণ, আদতে ওয়েস্ট আর্কটিকা নামে কোনো দেশেরই অস্তিত্ব নেই। ফলে তাঁর কূটনীতিক হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। শুধু এটাই নয়, পুলিশের ভাষ্যমতে হর্ষবর্ধন সাবোরগা, পোলভিয়া, লোডোনিয়ার মতো কল্পিত দেশের রাষ্ট্রদূত বলে নিজেকে পরিচয় দিতেন।

পুলিশ জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে চাকরিপ্রার্থীদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার জৈন রাজধানী নয়াদিল্লির প্রতিবেশী রাজ্য উত্তর প্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি ভাড়া বাসায় ওয়েস্ট আর্কটিকা নামের একটি কল্পিত দেশের দূতাবাস চালাচ্ছিলেন, যা অবৈধ। এ রকম কোনো দেশের অস্তিত্বই নেই। তিনি জাল কূটনৈতিক নম্বর প্লেট লাগানো গাড়ি ব্যবহার করতেন। নিজেকে প্রভাবশালী দেখানোর জন্য ভারতের নেতাদের সঙ্গে এডিট করা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করতেন।

গত সপ্তাহে জৈনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর এক বিবৃতিতে পুলিশ জানায়, জৈনের মূল কাজ ছিল বিদেশে চাকরির ব্যবস্থা করে দেওয়ার নামে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির কাছ থেকে অর্থ নেওয়া। পাশাপাশি তিনি ভুয়া কোম্পানির মাধ্যমে হাওলা পদ্ধতিতে (অবৈধ অর্থ লেনদেন) অর্থ পাঠানোর একটি চক্রও চালাতেন।

পুলিশ আরও জানায়, তাঁর বিরুদ্ধে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে।

জৈনের ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ নগদ সাড়ে ৫৩ হাজার মার্কিন ডলার , জাল পাসপোর্ট এবং ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নকল সিলসহ জাল নথিপত্র উদ্ধার করেছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে এএফপি হর্ষবর্ধন বা তাঁর কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেনি।

পুলিশ যে ওয়েস্ট আর্কটিকার কথা বলেছে, সেটি আসলে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত একটি অলাভজনক সংগঠন। এটি আন্টার্কটিকার পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি বিশাল, নির্জন অঞ্চলের সংরক্ষণে কাজ করার পাশাপাশি গবেষণার কাজে নিয়োজিত। এটি কোনো দেশ নয়।

একটি বিবৃতিতে ওয়েস্ট আর্কটিকা জানিয়েছে, হর্ষবর্ধন জৈন তাদের একটি ‘বড় অঙ্কের অনুদান’ দিয়েছিল। এরপর তাঁকে ‘ভারতে সম্মানসূচক কনসাল’ হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছিল। তারা স্পষ্ট করে জানিয়েছে, জৈনকে কখনোই রাষ্ট্রদূতের পদ বা কোনো কূটনৈতিক ক্ষমতা দেওয়া হয়নি।

অনারারি বা সম্মানসূচক কনসাল বলতে বোঝায়, এমন একজন ব্যক্তি, যিনি কোনো দেশের হয়ে অন্য দেশে প্রতীকী বা সীমিত দায়িত্বে কূটনৈতিক প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন। তিনি সরকারি কূটনীতিক নন। তাঁকে সাধারণত বেতনও দেওয়া হয় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *